অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারা কারা প্রার্থী হতে পারবেন সে বিষয়ে প্রার্থীর যোগ্যতা ও অযোগ্যতার বিধান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ইসি এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করছে। যেখানে সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতার বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বা থাকার যোগ্যতা-অযোগ্যতা সংক্রান্ত সংবিধানের ৬৬(১) (২) অনুচ্ছেদে ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ১২(১) অনুচ্ছেদে বিধান রয়েছে। সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদের ‘প্রজাতন্ত্রের কর্ম’ ও ‘সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের’ ব্যাখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, অনুচ্ছেদ ১২ এর উপ-ধারা (ড) অনুযায়ী কোম্পানির পরিচালক বা ফার্মের অংশীদার কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া কোনো ঋণ বা তার কোনো কিস্তি মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে পরিশোধে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হবেন।
কিন্তু অনুচ্ছেদ-১২-এর দফা (১)-এর উপ-দফা (ঠ) কৃষি কাজের জন্য গৃহীত ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ ব্যতীত, মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে ব্যাংক থেকে নেওয়া কোনো ঋণ বা তার কোনো কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে অযোগ্য হবেন। সেই সঙ্গে উপ-দফা (ঢ) অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে প্রদেয় সরকারি টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি বা অন্য কোনো সেবা প্রদানকারী সংস্থার বিল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হবেন।
মেয়র ও চেয়ারম্যানদের প্রার্থী হতে যে নির্দেশনা : উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মেয়রের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি/স্বায়ত্ত্বশাসিত/আধা-স্বায়ত্ত্বশাসিত ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত অফিস/প্রতিষ্ঠানের বা করপোরেশন অথবা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, কর্তৃপক্ষ ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য পদ্ধতিগতভাবে পদত্যাগ করতে হবে।
ছবিসহ ভোটার তালিকা : জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রণীত ছবিসহ ভোটার তালিকা ব্যবহার করতে হবে। ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণের কাজে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ছবিসহ ভোটার তালিকা ব্যবহার করবেন। তবে প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্ট বা পোলিং এজেন্টকে ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডি ক্রয় করতে পারবেন। এ জন্য জেলা বা উপজেলা পর্যায় হতে অথবা রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর থেকে মনোনয়নপত্র নেওয়ার সময় নির্বাচনি এলাকার আওতাধীন প্রতি ইউনিয়নের জন্য ৫০০ টাকা ও সিটি করপোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড/পৌরসভার প্রতি ওয়ার্ডের জন্য ৫০০ টাকা হারে ট্রেজারি চালান/পে-অর্ডার মাধ্যমে টাকা জমা দিতে হবে। ট্রেজারি চালানের কোড নং ১-০৬০১-০০০১-২৬৩১’ নবসৃজিত কোড ’১০৬০১০১১০০১২৫-১৪২৩২৫৩’। ছবিসহ ভোটার তালিকা শুধুমাত্র নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা ব্যবহার করবেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ : নির্বাচন পরিচালনার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর নির্বাচনি এলাকার জন্য বিভাগীয় কমিশনারদের ও অন্যান্য নির্বাচনি এলাকার জন্য জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের স্ব স্ব উপজেলার জন্য ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশনের জোনাল নির্বাহী কর্মকর্তা, উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার, ক্যান্টনমেন্ট নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার অথবা অন্য কোনো কর্মকর্তাকে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কর্মক্ষেত্রও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা আইন ও বিধি মোতাবেক রিটার্নিং কর্মকর্তাকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ সাপেক্ষে, রিটার্নিং অফিসারের অধীনে থেকে প্রয়োজনবোধে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
সময়সূচি সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি : গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ-১১-এর দফা (২) ও (৩) অনুসারে সময়সূচি জারির পর, যথাসম্ভব, রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাদের আওতাভুক্ত নির্বাচনী এলাকায় সময়সূচির প্রজ্ঞাপন এবং সময়সূচির আলোকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবেন। গণবিজ্ঞপ্তিতে কমিশনের ঘোষিত সময়সূচির উল্লেখ থাকবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা/সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের স্থান ও সময় উল্লেখ করে একই গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মনোনয়নপত্র আহ্বান করতে হবে।
এখানে উল্লেখ্য যে, মনোনয়নপত্র অফিস চলাকালীন সময় অর্থাৎ সকাল নয়টা হতে বিকেল চারটা পর্যন্ত নেওয়া হবে। আরও উল্লেখ্য যে, নির্ধারিত তারিখ ও সময়ের মধ্যে সরাসরি মনোনয়নপত্র দাখিলের পাশাপাশি অনলাইনেও মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। গণবিজ্ঞপ্তির অনুলিপি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার দর্শনীয় স্থানগুলো ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অফিসে টাঙিয়ে দিতে হবে।
মুদ্রিত ছবিসহ ভোটার তালিকার সঙ্গে ছবি ছাড়া সিডি যাচাই : প্রার্থীদের দেওয়া ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডির সঙ্গে ছবিসহ মুদ্রিত ভোটার তালিকা শতভাগ যাচাই করে ভোটকেন্দ্রে পাঠাতে হবে।
Leave a Reply